কলকাতা : আর রাজ্যে বেকার থাকবে না, রাজ্যের বেকার যুবক – যুবতীদের আর বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবেনা, গত বছর নেতাজী ইন্ডোরে কর্মসংস্থান সম্পর্কিত এক আলোচনা সভায় রাজ্যের বেকার যুবক – যুবতীদের উদ্দেশ্যে এমনই প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনিতে সাম্প্রতিক শিক্ষক দুর্নীতি কাণ্ডে বেশ ব্যাক ফুটে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। তার ওপর বছর ঘুরতেই রাজ্যে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই অবস্থায় সাম্প্রতিক দুর্নীতির কালির ছিটে ঘাস ফুলের ওপর থেকে তুলে পরিচ্ছন্ন ভাব মূর্তির সরকার মানুষের সামনে তুলে ধরাই প্রধান লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে এবার ব্যাপক হারে নিয়োগ দিয়েই সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাই এবার কর্মসংস্থান নিয়ে আসরে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। পাশাপাশি শিক্ষক দুর্নীতি কাণ্ডে আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বলেছেন, ‘যারা ন্যায্য বিচার পাইনি তারা আমাদের থেকেই সঠিক বিচার পাবেন’। রাজ্যের লাগামহীন বেকারত্ব প্রসঙ্গে এ শুধু যে মুখ্যমন্ত্রীর কথার কথা নয় তার প্রমান মিলল এবার হাতে নাতে। মুখ্যমন্ত্রী তো ঘোষণা করেই সাড়া। কিন্তু কোথায় কিভাবে হবে নিয়োগ ? এ প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই ১০০ দিনের কাজে ব্যপক হারে কর্মী নিয়োগের কথা বলা হয়েছে রাজ্য সরকারি তরফে।
আসলে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। একেবারে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজে টাকা নয় ছয়ের অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। দুর্নীতি বা কিছু একটা যে হয়েছে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে সাম্প্রতিক জেলায় জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো কড়া বার্তায় তা ফের স্পষ্ট। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রতিটি জেলার জেলা শাসকদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন ১০০ দিনের কাজে কোনও অভিযোগ এলেই অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরাসরি এফআইআর করতে।
তবে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে দুর্নীতির আঁচ ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে দিল্লির দরবারে। সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের তদারকিতে তা একেবারে জলের মতো পরিস্কার হয়ে গিয়েছে। তাই আর দেরি না করে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি রুখতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্র সরকার এ রাজ্যে ১০০ দিনের মজুরির টাকা পাঠানো বন্ধ করেছে। কেন্দ্র সরকারের এহেন বিমাতৃ সুলভ আচরণে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের উচ্চ স্তর থেকে শুরু করে নিচু তলার নেতা – কর্মীরা । পাশাপাশি এ রাজ্যের মাটিতে একশো দিনের কাজে দুর্নীতির তদারকিতে আসা কেন্দ্র সরকারের প্রতিনিধিদের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এ রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার অগনিত জব কার্ড হোল্ডার । তাদের দাবি , কাজ করিয়ে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে কেন্দ্রের মোদী সরকার । ফলে একশো দিনের কাজ নিয়ে গত অয়েক মাস ধরে এ রাজ্যের মাটিতে চলছে অরাজকতার পরিবেশ । কিন্তু আর মাত্র কয়েক মাস পরেই এ রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ।
তবে কেন্দ্র সরকারের ওপর কোনও ভাবে নির্ভর করতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এই অবস্থায় পঞ্চায়েত ভোটে ডিভিডেন্ড নিজের ঘরে তুলতে এবার সেই দুর্নীতিকেই কর্ম সংস্থানের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই ১০০ দিনের কাজের তদারকিতে জেলায় জেলায় থার্ড পার্টি অবজারভার নিয়োগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারি তরফে। এ ক্ষেত্রে প্রতি জেলায় প্রচুর সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন।
এ বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী, ১০০ দিনের কাজে একেবারে গোরা থেকে দুর্নীতি রুখতে দেশের প্রতিটি রাজ্যের সরকার কে এক জন করে থার্ড পার্টি অবজারভার নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের এই নির্দেশ কে এখনও পর্যন্ত গুরুত্বই দেয়নি বহু রাজ্য। তবে এই তালিকায় শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলের নয় খোদ বিজেপি শাসিত রাজ্যের সরকারগুলিও কেন্দ্রের এই থার্ড পার্টি নিয়োগের বিষয়টিতে আমল দেয়নি বলে অভিযোগ। আসলে থার্ড পার্টি অবজারভার হল একটি বিশেষ পদ। যিনি এই কাজে নিযুক্ত হবে তাকে প্রথমে প্রবেশন পিরিয়ডে নিয়োগ করা হবে। কাজে যুক্ত হওয়ার এক মাস পর নিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জমা না পড়লে এমনকি ওই ব্যক্তির কাজের খতিয়ান দেখে তাকে স্থায়ী হিসাবে নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুসারে। থার্ড পার্টি অবজারভারের কাজ হল, নিযুক্ত হওয়া ব্যক্তি ১০০ দিনের কাজের বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন এবং এই কাজে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে সেই অভিযোগ কে গুরুত্ব দিয়ে শোনার পাশাপাশি সেই অভিযোগের বিষয়ে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে সরকারের ঘরে সমস্ত রিপোর্ট জমা করবেন।
পাশাপাশি ২৮ শে মার্চ সিঙ্গুরে জনসভা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে সারা রাজ্য জুড়ে মোট ১২ হাজার কিমি গ্ৰামীন সড়ক নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন বলে জানা গিয়েছে । এর পাশাপাশি সেই রাস্তা নির্মাণের কাজে এরাজ্যের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতাধীন শ্রমিকদেরকে এই কাজে নিয়োজিত করা হতে পারে বলে সরকারি সুত্রে খবর । এমনকি পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে এইসব গ্ৰামীন সড়ক নির্মাণ করার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার তহবিল ও গঠন করা হয়েছে । পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় থাকা জব কার্ড হোল্ডারদের রাজ্য সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তরে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে । পঞ্চায়েত ভোট কে সানে রেখে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও ১০ লক্ষ শূন্যপদে নিয়োগ করা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে । আর সবচাইতে বড় কথা বিষয় এই ১০ লক্ষ শূন্যপদে কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে জানা গিয়েছে । এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
.
Telegram Channel Link : Click Here
TAG – #WB #GOVT #RECRUITMENT #MGNREGA #MAMTA BANERJEE #MODI
Govt Job is a genuine Job Content Provide. We work from few years. We provide genuine and helpful content to user. Thank You